বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্যময় এক ঘটনা পর্ব-১

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, যা ডেভিল’স ট্রায়াঙ্গল হিসাবেও পরিচিত। পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় স্থানগুলির মধ্যে এটি একটি। বারমুডা, মিয়ামি এবং পুয়ের্তো রিকোর মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগরে আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এই সামুদ্রিক এলাকাটি বহু অমীমাংসিত রহস্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বিশ্বের একটি ব্যস্ত জলপথের অংশ, প্রতিদিন আমেরিকা, ইউরোপ এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে অনেক জাহাজ এই রাস্তা দিয়ে পাড়ি দেয়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য

কয়েক শতাব্দী ধরে এই অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক জাহাজ এবং বিমান রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এছাড়াও, এই এলাকাটি বিগত দশকগুলিতে হাজার হাজার লোক নিখোঁজ হওয়ার জন্য দায়ী। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল – শব্দটি প্রথম ভিনসেন্ট গাদিস নামে একজন লেখক ১৯৬৪ সালে আরগোসী ম্যাগাজিনে তাঁর প্রকাশিত নিবন্ধে ব্যবহার করেছিলেন। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ব্যাপারে গল্পের শুরু পঞ্চদশ শতাব্দীতে যখন ক্রিস্টোফার কলম্বাস নতুন পৃথিবীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন। তিনি তাঁর যাত্রা কাহিনীতে লিখেছিলেন যে এই অঞ্চল অতিক্রম করার সময় কিছু আগুনের শিখা রহস্যজনক আচরণ করতে দেখেছিলেন।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য

এরপর সেগুলি সমুদ্রের মধ্যে মিলিয়ে যায়। এই সামুদ্রিক এলাকাটি পৃথিবীর অন্যতম সবথেকে রহস্যজনক এলাকা হিসেবে পরিচিত। শুধুমাত্র ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে যা খবর পাওয়া গেছে তা হলো প্রায় ৫০ টি জাহাজ ও ২০ টি বিমান এই এলাকায় রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়েছে। ৮০০০ এরও বেশি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে এই এলাকাটি। সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে। আজ এই আর্টিকেলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এ সবথেকে আলোচিত কিছু রহস্যজনক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার ব্যাপারে আমি আপনাদের জানাবো। সম্ভবত জাহাজ দুর্ঘটনার অন্যতম সবচেয়ে রহস্যজনক ঘটনা হওয়া এই জাহাজটির ভাগ্যেই লেখা ছিল।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্যময় ঘটনার ব্যাখ্যা পর্ব-২

১৮৭২ সালের ৪ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্ক থেকে ইতালির জেনোয়ায় পথে যাত্রা শুরু করে এই জাহাজটি। ক্যাপ্টেন বেনিয়ামিন ব্রিগস, তাঁর স্ত্রী এবং তাদের দুই বছরের কন্যা জাহাজে ছিলেন। এছাড়াও জাহাজে ছিলেন ৭ জন কর্মীদল। জাহাজটি ব্যবসা করার জন্যে এলকোহল মজুত করে নিয়ে যাচ্ছিলো।

রহস্যজনক কিছু বিমান দুর্ঘটনা যার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়

কিন্তু, কয়েক দিন পরে, যখন গ্রাসিয়া নামক একটি ব্রিটিশ জাহাজ আজোরেস দ্বীপপুঞ্জের কাছে আটলান্টিকের জলে আংশিক ডুবে থাকা মেরি সেলেস্টিকে খুঁজে পেল, তখন জাহাজটিতে কেউ ছিলোনা এবং লাইফবোটটিও নিখোঁজ ছিল। জাহাজের মধ্যে মজুত সমস্ত এলকোহল ব্যারেলগুলি খালি ছিল।

মার্কিন নেভি জাহাজ

শুধুমাত্র ডেকের ওপর একটি তরোয়াল খুঁজে পাওয়া যায়। জাহাজের যাত্রীদেরর কোথাও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মার্কিন নেভি জাহাজ USS Cyclops ১৯১৮ সালের মার্চ মাসে ব্রাজিল থেকে বাল্টিমোর এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। জাহাজে ছিল ৩০৯ সদস্যের কর্মীদল। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অঞ্চলের ওপরের দিয়ে যাওয়ার সময় জাহাজটি রহস্যজনক ভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। এমনকি জাহাজটি থেকে রেডিও মারফত কোনোরকম বিপদ সংকেত এর বার্তা আসেনি। অনেক তল্লাশি চালানোর পরেও এতো বড়ো জাহাজের কোনো চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য

১৯৪১ সালে, ইউএসএস প্রোটিয়াস (uss proteus) নামে একটি মার্কিন নৌবাহিনীর মালবাহী জাহাজ ৫৮ জন যাত্রী নিয়ে আকস্মিক ভাবে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে হারিয়ে যায়। এক মাস পরে, আর একটি জাহাজ, ইউএসএস নেরিয়াস (USS Nereus) একই রাস্তায় ৬১ জন যাত্রীর সাথে নিখোঁজ হয়েছিল। ১৯৪৫ সালে মার্কিন নেভির পাঁচটি বোমারু যুদ্ধবিমান নিয়মিত তিন ঘন্টার যুদ্ধাভ্যাস করবার জন্যে ফ্লোরিডার নৌঘাঁটি থেকে রওনা দেয়।

ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিস্ত্ব

ফ্লাইট লিডার Lieutenant Charles C বেতারমাধ্যমে সর্বশেষ কথোপকথনে বলতে থাকেন যে তার কম্পাস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। চারপাশের পরিবেশ অদ্ভুত দেখাচ্ছে, এমনকি সমুদ্রও অদ্ভুত লাগছে। হারিয়ে যাওয়ার আগে এরকম কিছু বার্তা রেকর্ড হয় যে সমুদ্রের জলের রং সম্পূর্ণ সাদা দেখাচ্ছে। এরপর ধীরে ধীরে সিগন্যাল আসা বন্ধ হয়ে যায়। বিমানগুলি চিরতরে নিখোঁজ হয়ে যায়। এরকম বহু জাহাজ ও বিমান এভাবেই হারিয়ে গেছে এই এলাকাতে।

কলকাতায় অবস্থিত খুব ভয়ানোক ভুতুড়ে এক স্থান

এর পেছনে কি কারণ দায়ী হতে পারে? ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিস্ত্ব? কোনো দানবাকৃতি সামুদ্রিক প্রাণী? অপ্রাকৃতিক ভাবে উৎপন্ন হওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ? বিজ্ঞানীদের কি ব্যাখ্যা এই রহস্যগুলির পিছনে? বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর এই রহস্যের ব্যাখ্যা জানতে বা পড়তে Next এ ক্লিক করুন।

NEXT

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *