ভারতবর্ষের সবথেকে বেশি ভয়ানক ভৌতিক এলাকার রহস্য

ভারতবর্ষের ভৌতিক এলাকার রহস্যঃ ভুত বিশ্বাস করেন? করেননা? কি বললেন? বুজরুকি? অন্ধবিশ্বাস? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনারই জন্যে। ভানগড় ফোর্ট রাজস্থানে অবস্থিত। এই চারশো বছরের পুরোনো দুর্গটিই হলো ভারতের মধ্যে সবথেকে কুখ্যাত ভৌতিক এলাকা। এই দুর্গে এরকম বহু ভৌতিক ঘটনার চাক্ষুস প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ভারতবর্ষের সবথেকে বেশি ভয়ানক এলাকার রহস্য

শুধু প্রমাণ? এরকম বহু ঘটনার বহু সাক্ষী এলাকার মানুষরাই। আপনার কি জানা আছে যে ভানগড় দুর্গ এমন একটি জায়গা যেখানে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে Archaeological Survey of India অর্থাৎ জাতীয় প্রত্নতাত্বিক বিভাগ থেকে জারি করা সতর্কীকরণ। এই সতর্কীকরণ ব্যানারগুলিতে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে যে সূর্যাস্তের পরে ও সূর্যোদয়ের আগে এই এলাকাতে যেকোনো ব্যক্তির প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।

চলুন তাহলে এই পোস্টটি পড়ে বুঝি যে ভানগড় ফোর্ট এতো ভয়ানক কেন? আর এর পিছনে রহস্য কি? ভানগড় দুর্গটি রাজস্থানের আলওয়ার জেলায় বিখ্যাত সরিস্কা টাইগার রিজার্ভের সীমানায় অবস্থিত। কুখ্যাত ভৌতিক জায়গাগুলির তালিকায় মধ্যে সবথেকে ওপরে থাকায় ব্যাপক পরিমানে পর্যটক এই জায়গাটির প্রতি আকর্ষিত হয় ও এটি একটি অন্যতম বিখ্যাত পর্যটনস্থান।

কিন্তু কি জন্যে আজ ভানগড় এর এই পরিণতি? চলুন আজ ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখা যাক। ভানগড় বাস্তবে প্রাচীন যুগের একটি সমৃদ্ধ শহর ছিল। সম্রাট আকবরের দরবারের নবরত্নের অন্যতম রাজা মাধো সিংহ সপ্তদশ শতাব্দীতে তাঁর ছেলে মন সিংহের জন্য এই দুর্গটি নির্মাণ করেছিলেন| ভানগড় দুর্গটি এক সময় সৌন্দর্য এবং শক্তির প্রতীক ছিল।

সাধু বা সন্ন্যাসীর বাসস্থান

এরকম বিশ্বাস করা হয় যে রাতারাতি জনশূন্য হওয়ার আগে ভানগড়ে ১০০০০ এরও বেশি লোক বাস করত। আপনি অভিশাপ এবং ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বাস করেন কিনা জানি না তবে ভানগড় এর ধ্বংসের পিছনে এরকমই একটি ভয়ঙ্কর গল্পের প্রচলন আছে। লোককথা অনুযায়ী, ভানগড় দুর্গ যে ভূমিতে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে একসময় গুরু বালু নাথ নামে এক পূণ্য সাধু বা সন্ন্যাসীর বাসস্থান ছিল।

মাধো সিংহ দুর্গটি নির্মাণের আগে তার যথাযথ অনুমতি নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সন্ন্যাসী একটি শর্ত রেখেছিলেন যে দুর্গের ছায়া যেন কখনও তার বাড়ির উপরে না পড়ে| কিন্তু মাধো সিংয়ের উত্তরাধিরারি এই কথাগুলিকে ভুলে গিয়ে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেন ও সেই কাজটিই করেছিলেন যা সন্ন্যাসী বারণ করেছিলেন। ফলস্বরূপ, দুর্গের ছায়া সেই সন্যাসীর বাড়ির উপরে পড়ে ও সন্যাসীর দ্বারা সমগ্র ভানগড় অভিশপ্ত হয়ে যায়।

সাধু বা সন্ন্যাসীর বাসস্থান

এখানে আরও একটি গল্প খুব বেশি জনপ্রিয়। লোককাহিনী অনুসারে রত্নাবতী নামে ভানগড়ের এক রাজকন্যা ছিলেন যিনি একজন অত্যন্ত সুন্দরী নারী ছিলেন। তাঁর অপূর্ব সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে এই অঞ্চলের একজন তান্ত্রিক তার প্রেমে পড়েছিলেন। রাজকন্যাকে পাওয়ার জন্য সেই তান্ত্রিক তার শরীরে ব্যবহার করার তেল পরিবর্তন করেছিলেন কোনোভাবে। তার জায়গায় সেই তান্ত্রিক কালোজাদু দ্বারা নির্মিত অন্য এক তেল রেখে দিয়েছিলেন।

রাজকন্যা রত্নাবতী

তবে, তার জঘন্য কাজ করার আগে, রাজকন্যা রত্নাবতী কোনোভাবে সেই আঁচ পেয়েছিলেন এবং যাদুতেলটি আশেপাশের একটি বিশাল পাথরের উপরে ফেলে দিয়েছিলেন। এর ফলে সেই তান্ত্রিক মৃত্যুমুখে পতিত হন। তবে শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার আগে তিনি পুরো ভানগড়কে অভিশাপ দিয়েছিলেন। তাঁর ভয়ঙ্কর শেষ কথাটি সঠিকভাবে প্রমাণ হয়। পরের বছরই ভানগড়ের শাসক শত্রূর হাতে চরম পরাজয়ের মুখোমুখি হন।

ইন্টারনেটের অন্ধকার জগৎ ডার্ক ওয়েব ও ডিপ ওয়েব

তাঁর পুরো সেনাবাহিনী বিনষ্ট হয়েছিল এবং ভানগড়ের সমস্ত বাসিন্দাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। যদিও রাজকন্যার কি হয়েছিল? এটি এখনও রহস্য। তবে এরকম শোনা যায় যে তাঁর ও একরকম দুর্ভাগ্যজনক ও লাঞ্ছনাময় পরিণতি ঘটে। এইবার ভানগড় দুর্গের ব্যাপারে অবাক করা কিছু তথ্য আপনাদের জানাতে চলেছি।

Archaeological Survey of India

আপনার কি জানা আছে যে ভানগড় দুর্গ এমন একটি জায়গা যেখানে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে Archaeological Survey of India অর্থাৎ জাতীয় প্রত্নতাত্বিক বিভাগ থেকে জারি করা সতর্কীকরণ। এই সতর্কীকরণ ব্যানারগুলিতে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে যে সূর্যাস্তের পরে ও সূর্যোদয়ের আগে এই এলাকাতে যেকোনো ব্যক্তির প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এই এলাকায় বহু মৃত্যু অথবা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে তাই এতটা সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।

রহস্যজনক কিছু বিমান দুর্ঘটনা যার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়

এখানে স্থানীয়দের মতে এই সতর্কীকরণ উপেক্ষা করে যারাই রাতে এই এলাকাতে থাকতে গিয়েছে তারা আর কখনো ফেরত আসেনি। ভানগড় দুর্গ এলাকাতে যেকোনো বিদেশী ব্যক্তির অবাধ প্রবেশ নিষেধ। এর কারণ এরকম বহু বিদেশী পর্যটক বিধিনিষেধ অমান্য করেছিলেন যার জন্যে এতো কড়া নিয়ম। প্রবেশের জন্যে বিদেশী ব্যক্তিদের বিশেষ অনুমতিপত্রের প্রয়োজন পড়ে। এতে অবশ্য বিদেশী পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই প্রশাসনের উপরে ক্ষুব্ধ।

এই এলাকাতে অবস্থিত প্রতিটি বাড়ি ছাদবিহীন। হ্যাঁ, কোনও বাড়ির মাথায় পুরো ছাদ নেই। এটি প্রচলিত আছে যে সন্ন্যাসী এই শহরটিকে চূড়ান্ত ধ্বংসের জন্য অভিশাপ দিয়েছিলেন, সেই অভিশাপই এর জন্য দায়ী। স্থানীয়দের মতে, এই বাড়িগুলিতে ছাদ নির্মাণ করা অসম্ভব, কারণ তৈরি হওয়ার সাথে সাথে এটি ভেঙে পড়ে, যার ফলে অতীতে বহু মানুষের জীবনহানি ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *