তাহলে কি এলিয়েন সত্যিই আছে? একজন অনেক বড় ব্যক্তিত্ব যা দাবি করলেন তা শুনে যে কোনো কল্পবিজ্ঞানপ্রেমী মানুষের রীতিমতো ঘুম উড়ে যাবে। তবে হ্যাঁ, বেশিরভাগ মানুষ এইসব কথাকে পাগলের প্রলাপ বলে মনে করবে। কারণ আমরা এখনো এই কথাকে মেনে নেওয়ার জন্যে প্রস্তুত নয়। এমন কি কথা বললেন কেউ যা এই দাবিকে এতো জোরালো করে দিয়েছে?
এই বছরের ডিসেম্বর এর ৯ তারিখে একটি খবর নেটদুনিয়াকে আলোড়িত করে রেখেছে। ইসরাইল এর প্রাক্তন স্পেস সিকিউরিটি চিফ হাইম এশেদ যিনি ৩০ বছর নিজেকে দেশসেবায় নিয়োজিত করেছিলেন, তিনি অদ্ভুত এক দাবি করেছেন। ৮৭ বছর বয়সী এই ভদ্রলোক সরাসরি দাবি করেছেন যে এলিয়েনরা আমাদের মধ্যেই রয়েছে। তারা আমাদের ক্ষমতাশালী সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখে। তারা বলেছে যেন তাদের উপস্থিতির কথা সাধারণ মানুষের মধ্যে জানানো না হয়।
পৃথিবীতে কি তাহলে সত্যিই এলিয়েন আছে?
এর কারণ মানবজাতি এইসব কথাগুলি মেনে নেওয়ার জন্যে প্রস্তুত নয়। তিনি জানিয়েছেন যে সেই এলিয়েন প্রজাতি সমানভাবে উৎসুক মানবজাতি সম্পর্কে জ্ঞান সঞ্চয় করবার জন্যে এবং তারা ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সাথে একটি গোপন চুক্তি করে রেখেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী মঙ্গলগ্রহে মাটির নিচে কোনো এক গবেষণাগারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ও এলিয়েনরা মিলিতভাবে গবেষণা করে যাচ্ছে।
তিনি এও বলেন যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ব্যাপারে জানেন ও তিনি এটা প্রকাশ করেননি কারণ গ্যালাকটিক ফেডারেশন থেকে তাকে মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে। যদিও ৮৭ বছর বয়সী হাইম এশেদ কে জিজ্ঞেস করা হয় যে কেন তিনি আগে বলেননি তো তিনি জানান যে ৫ বছর আগেও যদি তিনি এই ব্যাপারে কিছু বলতেন তাহলে ওনাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হতো।
দাঁড়ান, দাঁড়ান, দাঁড়ান, এখুনি আর্টিকেলটি পড়া ছেড়েবেননা। আপনি হয়তো ভাবছেন, যত্তসব বাজে গল্প! এলিয়েন? মঙ্গলগ্রহে জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টার? গ্যালাকটিক ফেডারেশন? বুড়োলোকটার মনে হয় রিটায়ার হবার পর হলিউডের সিনেমা দেখতে দেখতে মাথা খারাপ হয়ে গেছে তাই নিয়ে এতো লম্ফঝম্প শুরু করেছে। বিশ্বাস করুন ঠিক একই জিনিস আমিও ভেবেছিলাম যদি না আরো অনেককিছু ইন্টারনেটে সার্চ করে পড়াশুনো করতাম। হাইম এশেদ এমন দাবি প্রথমবার করেছেন তা নয়।
মহাকাশে যাওয়া প্রথম ব্রিটিশ নভোচারী
তিনি তাঁর বই – দ্য ইউনিভার্স বিয়ন্ড দ্য হরিজনেও একইরকম দাবি করেছিলেন। এর আগে, মহাকাশে যাওয়া প্রথম ব্রিটিশ নভোচারী হেলেন শারমান দাবি করেছিলেন যে এলিয়েনদের অস্তিত্ব রয়েছে এবং তারা সম্ভবত পৃথিবীতে ছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, নাসা সহ বেশ কয়েকটি স্পেস এজেন্সি পৃথিবীর ওপারে জীবনের সম্ভাবনা পুরোপুরি খারিজ করে নি। এমনকি নাসা এবং অন্যান্য মহাকাশ সংস্থা পৃথিবী ছাড়িয়ে জীবন অনুসন্ধানের জন্য বেশ কয়েকটি মহাকাশ মিশন চালু করেছে।
ধৈর্য নয়, বরং নিজের অভ্যাস ও নিজে বদলে যান
আমাদের ওপরে নজর রাখছে ভিনগ্রহের উপগ্রহ
প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে ছুটতে হবে স্বপ্নের পিছুপিছু এ পি জে আব্দুল কালাম
বেশ কয়েকটি গবেষণা অনুসারে, সৌরজগতে পৃথিবীর পর মঙ্গল গ্রহ সবচেয়ে বাসযোগ্য গ্রহ। রেড প্ল্যানেটের মাটিতে জল রয়েছে এবং এটি খুব বেশি ঠান্ডা বা খুব গরমও নয়। এটিতে যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যের আলো রয়েছে। এই বছরই এপ্রিল মাসের শেষের দিকে প্রথমবারের মতো আমেরিকার ডিফেন্স অফিস পেন্টাগন সরকারিভাবে একটি অজানা উড়ন্ত বস্তুর ভিডিও প্রকাশ করেছে যা কিনা দাবি করা হচ্ছে এলিয়েন স্পেসশিপ হিসেবে।
এবার আমি আপনাকে বেশ কিছু পুরোনো খবর বলছি যেগুলো আপনার জানা উচিত। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি খবর প্রকাশ করা হয় যে, রাষ্ট্রসংঘ তাদের বহির্জাগতিক মহাকাশ বিষয়ক বিভাগের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করতে চলেছেন মালয়েশিয়ান বিজ্ঞানী মাজলান ওথম্যান কে। ওনাকে একটি বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে যা হলো, বহির্জাগতিক বুদ্ধিমান ভিনগ্রহী প্রাণীরা যদি রাষ্ট্রসংঘের সাথে যোগাযোগ করতে চায় তাহলে তিনিই হবেন যোগাযোগের প্রথম সূত্র।
রাষ্ট্রপতি রেগানের কাছে সিআইএ
যাকে বলা যেতে পারে রাষ্ট্রসংঘের তরফ থেকে তিনি মানবজাতির হয়ে দূত এর কাজ করবেন। ১৯৮৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগান রাষ্ট্রসংঘে একটি স্মরণীয় বক্তব্য পেশ করেন। তিনি গোটা পৃথিবীর সমস্ত দেশের নেতাদের ভবিষ্যতে সম্ভাব্য এলিয়েন আক্রমণের সম্পর্কে সাবধানবাণী দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, যতক্ষণ না পর্যন্ত পৃথিবীর মানুষের ওপর বহির্জাগতিক কোনো শক্তি আক্রমণ করছে ততক্ষন পর্যন্ত মানবজাতি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলতে পারবেনা এবং নিজেদের মধ্যে লড়াই জারি রাখবে।
বিষেশজ্ঞদের মতে অবশ্যই রাষ্ট্রপতি রেগানের কাছে সিআইএ এবং নাসার কাছ থেকে অভ্যন্তরীণ তথ্য ছিল এবং তাকে জানানো হয়েছিল যে এলিয়েনদের উপস্থিতি রয়েছে। তবে তিনি জাতীয় সুরক্ষা বিধি লঙ্ঘন করে তার থেকে বেরিয়ে এসে কিছু বলতে পারেননি। সুতরাং পরিবর্তে, তিনি সিআইএ এবং নাসার কাছ থেকে তিনি যা জেনেছিলেন সে সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী বাকী নেতাদের প্রতি সূক্ষ্মভাবে ইঙ্গিত করেছিলেন।
এলিয়েনের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে
তিনি এটাও জানতেন যে জাতিসংঘের সভায় অন্যান্য রাষ্ট্রপতির খুব কম শতাংশই এলিয়েনের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতেন। এরকম বহু হাজার ঘটনা বহু হাজার প্রমান বিজ্ঞানীদের হাতে আজকের দিনে রয়েছে যা পুরোপুরি ভাবে দাবি করে বুদ্ধিমান ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিত্ব। এই প্রমাণগুলি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে তারা আমাদের মধ্যেই রয়েছে গোপনভাবে।
একটি সহজ জিনিস ভাবুন আমাদের এই অসীম ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের পৃথিবী একটি অতীব ক্ষুদ্র ছোট্ট অনুর মতো। লক্ষ্য কোটি নক্ষত্র এই গ্যালাক্সিতে, কোটি গ্যালাক্সি এই আকাশগঙ্গায় রয়েছে, এরকম কোটি আকাশগঙ্গা এই ব্রহ্মাণ্ডে। আজ অবধি বিজ্ঞানের ও গণিতের দ্বারা ব্রহ্মান্ডের যা আকার বোঝা গেছে তাতে এই ব্রহ্মাণ্ডে যত গ্রহ রয়েছে তার সংখ্যা প্রায় এইরকম ১০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ অর্থাৎ ১ এর পিঠে প্রায় ২৫ টি শূন্য বসলে যত হয়।
বিজ্ঞানীরা তো ইতিমধ্যেই এমন কিছু গ্রহের সন্ধান করে ফেলেছেন যেখানে প্রাণের সৃষ্টি হওয়ার মতো উপযুক্ত অবস্থা রয়েছে। সোজা কথায় যদি বলা যায় ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিত্ব অথবা আরো সুস্পষ্টভাবে আমাদের থেকেও উন্নত বুদ্ধিমান ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিত্ব থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বরং এটা বলা যেতে পারে যে অস্তিত্ব না থাকাটা অস্বাভাবিক।